উড্রো উইলসনের ‘চোদ্দ দফা’ শর্ত সম্বন্ধে লেখ | জাতিসংঘের উপর টীকা লেখ | জার্মানিতে নাৎসিবাদের উৎখানের কারণ কি ছিল

 উড্রো উইলসনের ‘চোদ্দ দফা’ শর্ত সম্বন্ধে লেখ | জাতিসংঘের উপর টীকা লেখ | জার্মানিতে নাৎসিবাদের উৎখানের কারণ কি ছিল


বিংশ শতকের ইউরোপ পঞ্চম অধ্যায় থেকে বহুবিকল্প-ভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) | তোমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে নবম শ্রেণির ইতিহাস ৫ম অধ্যায় বিংশ শতকে ইউরোপ থেকে  ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা আছে । আমাদের আশা এই প্রশ্নগুলি তোমাদের পরীক্ষায় খুবই কাজে আসবে।

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন


[প্র] উড্রো উইলসনের ‘চোদ্দ দফা’ শর্ত সম্বন্ধে লেখ।


ভূমিকা : আমেরিকার রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন মিত্রপক্ষ ও জার্মানির মধ্য স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য চোদ্দোটি শর্তযুক্ত এক ঘোষণা জারি করেন, যা 'চোদ্দোদফা শর্ত’ নামে পরিচিত । ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে এটি ঘোষণা হয়।

উড্রো উইলসনের চোদ্দোদফা শর্ত : উড্রো উইলসনের চোদ্দোদফা শর্তগুলির বিভিন্ন কারণ ছিল। সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো–

  • ১. সমস্ত রাষ্ট্র সমুদ্রপথে জাহাজ চালাবার পূর্ণ স্বাধীনতা পাবে।
  • ২. উপকরণ কমাতে হবে যুদ্ধের।
  • ৩. সমস্ত দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক বাধা-নিষেধ দূর করা হবে।
  • ৪. ঔপনিবেশিক সরকারের সঙ্গে স্থানীয় জনগণের স্বার্থ সমানভাবে বিচার করতে হবে।
  • ৫. রুশ ভূখন্ড থেকে সেনা সরানো এবং রাশিয়ার সম্পর্কে সহযোগিতা পূর্ণ আচরণ।
  • ৬. সমগ্র ফরাসি অঞ্চলের মুক্তি সাধন।
  • ৭. ইতালির সীমারেখার পুনর্বিন্যাস।
  • ৮. অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরির জনসাধারনকে স্বাধীনভাবে উন্নতি সাধনের ব্যবস্থা।
  • ৯. ভবিষ্যতে যুদ্ধ আটকানোর জন্য একটি জাতিসংঘ গঠন করতে হবে বলে জানা যায়।

উপসংহার : পরিশেষে দেখা যায় যে, উইলসনের এই চৌদ্দদফা শর্তের যথাযথ প্রয়োগ হয়নি। তথাপি উইলসন 'জাতিসংঘের জনক’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।


[প্র] জাতিসংঘের উপর টীকা লেখ।


ভূমিকা : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দেশের রাজনীতিকরা পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ও শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করে। এটি জাতিসংঘ বা 'লিগ অফ নেশনস’ নামে পরিচিত। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি জাতিসংঘের প্রথম অধিবেশন বসে।



জাতিসংঘের সংগঠন : জাতিসংঘের বিভিন্ন সংগঠন লক্ষ করা যায়। সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো—
১. সাধারণ সভা, 
২. পরিষদ, 
৩. আন্তর্জাতিক বিচারালয়, 
৪. সচিবালায়, 
৫. আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন।

জাতিসংঘের কার্যক্রম : জাতিসংঘের কার্যক্রম গুলি নির্ণয় আলোচনা করা হলো–

  • ১. শান্তি প্রতিষ্ঠা : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীতে শান্তিপূর্ণভাবে বিবাদের মীমাংসা ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ২. বিশ্ব উষ্ণায়ন : বিশ্বের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আর্থিক উন্নয়নের জাতিসংঘের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
  • ৩. সহযোগিতার ধারণা : জাতিসংঘ এই প্রথম আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ধারণাকে জনপ্রিয় করে তোলে।
জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারণ : জাতিসংঘের ব্যর্থতার বিভিন্ন কারণ লক্ষ করা যায়। সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো—

  • ১. জাতিসংঘের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী ছিল না।
  • ২. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিধর রাষ্ট্রের জাতিসংঘের সদস্যপদ গ্রহণ না করা।
  • ৩. বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মহামন্দা।
  • ৪. জার্মানি ও ইতালির প্রতি ইংল্যান্ড ফ্রান্সের তোষণনীতি।
  • ৫. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা জাতিসংঘ কে দুর্বল করে দেয় বলে জানা যায়।


[প্র] জার্মানিতে নাৎসিবাদের উৎখানের কারণ কি ছিল ?


ভূমিকা : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানিতে নাৎসি দলের উত্থান লাভের ঘটনা জার্মানি ও ইউরোপের ইতিহাসে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

নাৎসিবাদের উদ্ভবের প্রেক্ষাপট : দেখা যায় জার্মানিতে নাৎসি বাদী শক্তির উত্থান ঘটেছিল। সেই প্রেক্ষাপটগুলি হলো—

  • ১. ভার্সাই চুক্তির বিরুদ্ধে অসন্তোষ : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিজয়ী মিত্রপক্ষ ও পরাজিত জার্মানির মতো অপমানজনক ভার্সাই চুক্তি গড়ে উঠেছিল।
  • ২. ভাইমার প্রজাতন্ত্রের দুর্বলতা : ১৯১৯ থেকে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জার্মানির ভাইমার প্রজাতন্ত্রের ব্যর্থতার কারণে জার্মানির জনসাধারণের একটি বড় অংশ গণতন্ত্র সম্পর্কে শ্রদ্ধা হারায়।
  • ৩. জার্মানির আর্থ-সামাজিক সংকট : জার্মানির ভয়াবহ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রের সংকটজনক পরিস্থিতিকে হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসিদল কাজে লাগিয়ে প্রভাব বৃদ্ধি করতে থাকে।
  • ৪. হিটলারের ব্যক্তিত্ব : হিটলারের বক্তৃতা ও নাৎসিবাদের আকৃষ্ট হয়ে জার্মানির অসংখ্য মানুষ দলে দলে যোগ দেয় নাৎসিতে। এর ফলে নাৎসি দলের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়।
  • ৫. হিটলারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল : হিটলার জার্মানিতে নাৎসি দল নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির শাসক হন।
  • ৬. ফ্যুয়েরার : হিন্ডেনবার্গের মৃত্যু হলে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে হিটলার একই সঙ্গে জার্মানির প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী উভয়পক্ষে অধিষ্ঠিত হন। তখন তিনি হয়ে ওঠেন জার্মানির সর্বময় নেতা বা ফ্যুয়েরার।

উপসংহার : ঐতিহাসিক কে এস পিনসন মনে করেন যে, জার্মানিতে নাৎসি দলের শাসনের উত্থানের জার্মানির বিভিন্ন স্তরের মানুষ ব্যাপক সমর্থন জানিয়েছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত মানুষ হিটলারকে ত্রাতা বলে মনে করেছিল।

নবম শ্রেণির অন্যান্য অধ্যায়ের প্রশ্ন

  1. ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক
  2. বিপ্লবী আদর্শ । নেপোলিয়ন
  3. উনবিংশ শতকে ইউরোপ
  4. শিল্পবিপ্লব
  5. বিংশ শতকে ইউরোপ
  6. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
  7. জাতিসংঘ ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ



অন্যান্য ক্লাসের পোস্ট





ফাইল : বিংশ শতকে ইউরোপ

ফাইল টাইপ : পিডিএফ

সোর্স : গুগল ড্রাইভ

ডাউনলোড : File Link

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url