গণতন্ত্রের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের পার্থক্য | হেরেনভক তত্ত্ব কী | স্পেনের গৃহযুদ্ধ কী | রাসপুটিন কে ছিলেন | রুশীকরণ নীতি বলতে কী বোঝো
প্রিয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা,
গণতন্ত্রের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের পার্থক্য | হেরেনভক তত্ত্ব কী | স্পেনের গৃহযুদ্ধ কী | রাসপুটিন কে ছিলেন | রুশীকরণ নীতি বলতে কী বোঝো
৪১. গণতন্ত্রের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের পার্থক্য লেখ ?
গনতন্ত্রের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের বিভিন্ন পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় । পার্থক্য গুলি হল -
- ১. গণতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদ দুটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী রাজনৈতিক মতবাদ ।
- ২. জনগণের মতের উপর প্রতিষ্ঠিত শাসন ব্যবস্থা হল গণতন্ত্র ।
- ৩. গণতন্ত্রে বিরোধীদল মর্যাদাপূর্ণ মত প্রকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে । এবং অপরদিকে ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থায় বিরোধী দলের কোন ভূমিকা নেই বলে জানা যায়।
৪২. হিটলারের উৎখানের কারণ লেখ। অথবা, জার্মানিতে নাৎসি দলের জনপ্রিয়তার কারণ কি ছিল ?
হিটলারের উত্থানের বিভিন্ন কারণ ছিল। জার্মানিতে হিটলারের উত্থান ও নাৎসি দলের জনপ্রিয়তা ছিল। এর কারণগুলি নিম্নে আলোচিত হলো —
- ১. অপমানজনক ভার্সাই চুক্তির বিরুদ্ধে নাৎসি দলের প্রচার ।
- ২. জার্মানির বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে ভাইমার প্রজাতন্ত্রের ব্যর্থতা।
- ৩. জার্মানির অর্থ সামাজিক সংকট বেকারত্ব খাদ্য ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে নাৎসি দলের ইতিবাচক প্রচার।
- ৪. হিটলারের ব্যক্তিত্ব ও বাগ্মীতার দ্বারা জার্মানবাসীর মনে আসার সঞ্চার ।
৪৩. হেরেনভক তত্ত্ব কী?
হিটলার মনে করতেন, জার্মানরাই একমাত্র বিশুদ্ধ আর্য জাতির রক্তের অধিকারী ও বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতি। একারনেই জার্মান জাতি অন্যান্য জাতির উপর আধিপত্য স্থাপনের অধিকারী হন। তারের এই তও্বই হেরেনভক তও্ব নামে পরিচিত।
৪৪. 'মেইন ক্যাম্প 'গ্রন্থটি কার রচনা ? এটি কেন বিখ্যাত ?
এটি একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। এই গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন জার্মানির নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলার। এই গ্রন্থটি ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়। এই গ্রন্থে হিটলারের রাজনৈতিক চিন্তাধারা কর্মসূচির পরিচয় পাওয়া যায় বলে এই গ্রন্থটি ' 'নাৎসিবাদের বাইবেল ' নামে পরিচিত।
৪৫. স্পেনের গৃহযুদ্ধ কী?
১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের দুর্বল প্রজাতন্ত্রীক সরকারের বিরুদ্ধে জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর নেতৃত্বে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূচনা হয় তা স্পেনের গৃহযুদ্ধ নামে খ্যাত। দীর্ঘদিন এই গৃহযুদ্ধ চলার পর ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি ও ইতালির সাহায্য পুষ্ট হয়ে জেনারেল স্পেনের প্রজাতন্ত্রের উচ্ছেদ ঘটিয়ে সে দেশে এক নায়ক তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন ।
৪৬. জেনারেল ফ্রাঙ্কো কে ছিলেন ?
জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো ছিলেন ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত স্পেনের গৃহযুদ্ধের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা। তিনি এই গৃহযুদ্ধে জয়লাভ করেন এবং স্পেনের রাষ্ট্রনায়ক বা 'কডিলো '-তে পরিণত হন । তার সময়ের স্পেনকে ' ফ্রাঙ্কোবাদী স্পেন ' বলা হত।
৪৭. কাকে এবং কেনো 'আধুনিক রাশিয়ার জনক 'বলা হয় ?
পিটার দ্য গ্রেট কে আধুনিক রাশিয়ার জনক বলা হয় । কারণ গুলি হল —-
- ১. ব্রেসিয়ার উন্নতির জন্য বিভিন্ন সংস্কার মূলক কাজ করে জনগণের কৃতজ্ঞতাভজন হয়েছিলেন।
- ২. তিনি রাশিয়ায় সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন সংস্কার করেছিলেন।
- ৩. বৈদেশিক ক্ষেত্রে ও কূটনীতিতে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন ।
৪৮. রাসপুটিন কে ছিলেন ?
রাসপুটিন রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের একজন ধর্মগুরু ছিলেন। ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত । তিনি রুশ জার দ্বিতীয় নিকোলাসের স্ত্রী তথা রানী আলেকজান্ডার সমর্থন পেয়ে রাজদরবারে প্রভাবে স্থাপন করে উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী ও সেনাপতিদের অপদস্ত করতেন। তার চারিত্রিক শিথিলতা মানুষের মনে বিদ্বেষ সৃষ্টি করেছিল । ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের বিপ্লবের প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল ।
৪৯. রুশীকরণ নীতি বলতে কী বোঝো?
ষোলো শতক থেকে রাশিয়া অন্য দেশে বিশেষত তাতার শাসন এলাকাই খ্রিস্টধর্ম প্রচার ও রুশ ভাষা চাপিয়ে দিয়ে রুশীকরন শুরু করেছিল। ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ও পোল্যান্ড বিদ্রোহের পর রাশিয়ার জাররা জাংরা ইউরাল এলাকা,পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, ইউক্রেন, ফিনল্যান্ড ,বেসারাবিয়া বা মোলডাভা প্রভূতি এলাকার অরুশদের ওপর রুশ ভাসা ও রুশ সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার নীতি নিয়েছিলেন। এই নীতিটিই রুশীকরন নীতি নামে পরিচিত।
৫০. ' থার্ড সেকশন' কী?
গুপ্ত পুলিশ বাহিনীকে বলা হত থার্ড সেকশন । ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে জার প্রথম নিকোলাস এটি স্থাপন করেন ও বলেন এটি হবে রাশিয়ার নৈতিক ও রাজনৈতিক অভিভাবক। কিন্তু বাস্তবে এটিকে বিদ্রোহ ও বিপ্লব দমনে কাজে লাগানো হয় । অবশেষে লক্ষ্য করা যায় ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে এটি কে রদ করে রাশীয়াতে পুলিশবাহিনী গঠন করা হয়।
৫ম অধ্যায় : বিংশ শতকের ইউরোপ থেকে ২ নম্বরের অন্য পার্টের লেখা গুলো